Header Ads

Header ADS

আত্মশুদ্ধি ও আত্মগঠনের কয়েকটি উপকরণ। (৩য় পর্ব)


আত্মশুদ্ধি ও আত্মগঠনের কয়েকটি উপকরণ।

                                              ৩য় পর্ব

ভয় ও আশাঃ


ভয় হচ্ছে অন্তরের হেফাযতকারী এবং আশা হচ্ছে সত্তার শাফায়াতকারী। যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে চেনে সে তাঁকে ভয় করে এবং তাঁর প্রতি আশা স্থাপন করে। এগুলো হচ্ছে বিশ্বাসের দু’ টো পাখা যা দিয়ে প্রকৃত বান্দাহ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টির দিকে উড়ে যায়। এগুলো বুদ্ধির দু’ টো চোখ যাদের মাধ্যমে সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতিশ্রুতি ও হুমকি দেখতে পায় ; তার ভয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ন্যায় বিচার সম্পর্কে ভাবে সেই হুমকিকে খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করার মাধ্যমে। আশা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার উপচে পড়া নেয়ামত ডেকে আনে এবং অন্তরকে জীবন দেয় , একই সময়ে ভয় নফসকে হত্যা করে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ


‘‘ বিশ্বাসীর আছে দু’ ধরনেরভয় : যা চলে গেছে তা নিয়ে ভয় এবং যা আসবে তার জন্য ভয়। ’’


নফস-এর মৃত্যুতে নিহিত আছে অন্তরের জন্য জীবন– যা আমলে দৃঢ়তা আনে। যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ইবাদাত করে ভয় ও আশার ভারসাম্য নিয়ে সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং সে যা আশা করে তা লাভ করবে। একজন বান্দাহ ভীত ছাড়া আর কী হবে যখন সে জানে না তার কোন কাজের সময় তার খাতা বন্ধ হবে , যখন তার কাছে কৃত এমন কোন আমল নেই যা তাকে সাহায্য করতে পারে , কোন শক্তি নেই কিছু করার এবং কোন জায়গা নেই পালাবার ? কীভাবে সে আশা করতে ব্যর্থ হবে যখন সে জানে তার অক্ষমতা সত্ত্বেও সে ডুবে আছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার রহমত ও নেয়ামতগুলোর ভেতর যা গোনা যায় না বা যেগুলোকে সংখ্যাবদ্ধ করা যায় না। প্রেমিক তার রবের ইবাদাত করে আশা নিয়ে , নিজের অবস্থা নিয়ে ভাবে জাগ্রত ব্যক্তির দৃষ্টি দিয়ে এবং যাহেদ (যে বিরত থাকে) ইবাদাত করে ভয় নিয়ে।


হারাম ইবনে হাইয়্যানকে উয়ায়েস আল-ক্বরনী বলেছিলো :‘‘ মানুষ আশার কারণে কাজ করে , কিন্তু তুমি কাজ কর ভয়ে।’’ হারাম বললোঃ‘‘ দু ধরনের ভয় আছে : স্থায়ী এবং পরিবর্তনশীল। স্থায়ী ভয় আশা আনে , আর পরিবর্তনশীল ভয় আনে স্থায়ী ভয়। একইভাবে দু’ধরনের আশা আছে : গোপন ও প্রকাশ্য। গোপন আশা স্থায়ী ভয় আনে যা প্রেমের যোগসূত্রকে শক্তিশালী করে ; আর প্রকাশ্য আশা তার জীবৎকালে সে যা করেছে সে বিষয়ে তার অক্ষমতা ও ত্রুটিগুলো সম্পর্কে প্রত্যাশাগুলো পূর্ণ করে।


তৃপ্তিঃ


তৃপ্তি হলো যখন কোন ব্যক্তি সে যা ভালোবাসে ও সে যা ঘৃণা করে তা নিয়ে সন্তুষ্ট আছে ; এটি মারেফাতের নূরের একটি রশ্মি। যে তৃপ্ত সে তার সমস্ত পছন্দে বিলীন হয়ে গেছে ; সে হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার সাথে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সন্তুষ্ট আছেন। তৃপ্ত একটি নাম যা দাসত্বের অর্থ করে এবং একে অন্তরের আনন্দ হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে।


আমি আমার পিতা মুহাম্মাদ আল বাক্বির-কে বলতে শুনেছিঃ‘‘ যা উপস্থিত আছে তার সাথে অন্তরকে যুক্ত করা হলো শিরক এবং যা নেই তার সাথে যুক্ত করা কুফর (অবিশ্বাস): কথা গ্রাহ্য না করার স্বভাবের পাখা হলো এ দু’ টি। আমি অবাক হই তাকে নিয়ে যে দাবী করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার দাস হিসাবে এবং এরপর তাঁর রায়গুলো নিয়ে তর্ক করে। তৃপ্ত আধ্যাত্মিক লোকেরা (আরিফীন) এ রকম হওয়া থেকে অনেক দূরে।’’

পথ চলার বাতি

No comments

Powered by Blogger.